৫০ হাজার লোন নিয়ে ৪ ভাই দাঁড় করিয়েছেন দু চাকার সাম্রাজ্য
Image: google

৫০ হাজার লোন নিয়ে ৪ ভাই দাঁড় করিয়েছেন দু চাকার সাম্রাজ্য! রইল হিরো সাইকেলের সাফল্যের কাহিনী

আজকের যুগে শিশুরা হয়তো হাতে স্মার্টফোন নিয়েই জন্মায় এমনটাই মনে করা হয়। একটা সময় ছিল যখন শৈশবের নিজস্বই অর্থ ছিল। সেই সময়ে শিশুদের হাতে না ছিল স্মার্টফোন, না ছিল ভার্চুয়াল গেমের জগৎ।

সময় এখন এমন মোড় নিয়েছে যে শিশুদের হাতেও ফোন দেখতে পাওয়া যায়। আজ হিরো সাইকেলের ইতিহাসের কথা জানানো হচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন ভালো নম্বর পেযলে ছেলেমেয়েদের সাইকেল উপহার দেওয়া হতো। এমন পরিস্থিতিতে হিরো সাইকেলের গল্পটি বলা হয় তবে এর একটি মজার ইতিহাস রয়েছে। এটি শুরু হয়েছিল ব্রিজমোহন লাল মুঞ্জাল এবং তার তিন ভাই দয়ানন্দ, সত্যানন্দ এবং ওমপ্রকাশের সাথে।

তিনি পাঞ্জাবের (বর্তমানে পাকিস্তান) টোবাটেক সিং জেলার কামালিয়া শহরের বাসিন্দা ছিলেন। দেশভাগের আগে তিনি অমৃতসরে এসে সাইকেলের যন্ত্রাংশের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। অন্যদিকে, একদিন ব্রিজমোহন তার ভাইদের সামনে একটি সাইকেল তৈরির প্রস্তাব দেন। এর পরেই, সমস্ত ভাই সম্মত হন এবং লুধিয়ানায় কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।এই গল্পটি তত সহজ নয় যতটা শুনতে লাগে। এখানে যখন

অমৃতসরের মুঞ্জাল ভাইরা তাদের মালপত্র গুছিয়ে লুধিয়ানা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন একজন মুসলিম ব্যক্তি করিম দীন পাকিস্তানে যাচ্ছিলেন। জানা যায়, করিম দীনের সাইকেল প্যাডল তৈরির ব্যবসা ছিল। তিনি নিজেই নিজের ব্র্যান্ড নাম তৈরি করেছিলেন।যখন তিনি তার বন্ধু ওমপ্রকাশ মুঞ্জালের সাথে শেষবারের মতো দেখা করতে যান। ওমপ্রকাশ করিম দীনের ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করার অনুমতি চাইলে তিনি

রাজি হন। এর পর এই ব্র্যান্ডটির নাম হয় ‘হিরো’। এখান থেকেই শুরু হয় তাদের আসল গল্প। পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় বসতি স্থাপন করা এই ভাইদের জন্য তাদের বেছে নেওয়া রাস্তা এত সহজ ছিল না। একজন সাধারণ মানুষ যেমন ভাবে। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমে মুঞ্জাল ভাইরা রাস্তায়-ফুটপাতে সাইকেলের যন্ত্রাংশ বিক্রির কাজ শুরু করলেন। তখন সময়টা ছিল ১৯৫৬ সাল। এই ভাইয়েরা একসাথে ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ হাজার

টাকা লোন নিয়ে লুধিয়ানায় তাদের প্রথম সাইকেল যন্ত্রাংশ তৈরির ইউনিট স্থাপন করেন। হিরো সাইকেলের আসল গল্প এখান থেকেই শুরু হয়। তবে আগামী দশ বছরে এই সংস্থাটি অনেক বেড়ে গেছে। ১৯৬৬ সাল নাগাদ, এই কোম্পানি বছরে এক লাখ সাইকেল উৎপাদন শুরু করে। এরপর এই ভাইদের পরিশ্রম দিনের পর দিন চারগুণ বেড়ে যায়। এই কারণে ১৯৮৬ সালে হিরো সাইকেলের নাম গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড

রেকর্ডসে বিশ্বের বৃহত্তম সাইকেল প্রস্তুতকারক সংস্থা হিসাবে রেকর্ড করা হয়। অন্যদিকে, হিরো সাইকেলের সাফল্যের পিছনে মুঞ্জাল ভাইদের পরিশ্রম ছিল। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে অন্য কোম্পানিগুলোকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায় হিরো। এখানে সাইকেল ছাড়াও, মুঞ্জাল ব্রাদার্স হিরো গ্রুপের ব্যানারে সাইকেল কম্পোনেন্ট, অটোমোটিভ, অটোমোটিভ কম্পোনেন্ট, আইটি, পরিষেবার মতো পণ্যও উৎপাদন করে। এছাড়া

সাইকেলের জগতে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর হিরো গ্রুপও হিরো ম্যাজেস্টিক নামে টু হুইলার তৈরি শুরু করে। হিরো জাপানের জায়ান্ট টু হুইলার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হোন্ডার সাথে হাত মিলিয়ে (Hero Honda Motors Ltd) প্রতিষ্ঠা করে। এই কোম্পানিটি ১৩ এপ্রিল ১৯৮৫ সালে প্রথম বাইক (CD 100) চালু করে। এই দুটি কোম্পানি দেশে প্রায় ২৭ বছর ধরে একসাথে কাজ করে। তারপর ২০১১ সালে এই দুটি কোম্পানি আলাদা হয়ে (Hero মতচরপ) শুরু করে।

Check Also

মাত্র ২০০০ টাকায় মেশিন কিনে শুরু করুন এই দারুন লাভের ব্যবসা

মাত্র ২০০০ টাকায় মেশিন কিনে শুরু করুন এই দারুন লাভের ব্যবসা

যে কোন চাকরির থেকে ব্যবসা করে কিন্তু অনেকটাই বেশি উপার্জন করা যাচ্ছে।এমতাবস্থায় আজকের এই বিশেষ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *