আমেরিকার এক যুবককে প্রতিদিন ইয়ারফোন এবং হেডফোনে গান শোনার যে মূল্য দিতে হয়েছে, তা জানার পরে কানে ইয়ারবাড গোঁজার সাহস আর হয়তো হবে না আপনার।হে়ডফোন বা ইয়ারফোনে গান শুনতে তো আমরা কমবেশি সকলেই অভ্যস্ত। কিন্তু এই অভ্যেসের পরিণাম
কী হতে পারে, তার কোনও ধারণা আছে আপনার?সম্প্রতি আমেরিকার এক যুবককে প্রতিদিন ইয়ারফোন এবং হেডফোনে গান শোনার যে মূল্য দিতে হয়েছে, তাজানার পরে কানে ইয়ারবাড গোঁজার সাহস আর হয়তো হবে না আপনার।আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, জোশ লুক্সেমবার্গ
নামের বছর তেইশের ওই যুবক এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। প্রতিদিন কর্মস্থলে পৌঁছতে ট্রেন-বাস মিলিয়ে প্রায় ঘন্টা দু’য়েক রাস্তায় থাকতে হয় তাঁকে। ফেরার সময়ে আরও দু’ঘন্টা। প্রতিদিন এই চার ঘন্টা সময় মোবাইলে লোড করা গান ছিল তাঁর সঙ্গী। ইয়ারফোনের একপ্রান্ত কানে গুঁজে অন্যপ্রান্তটি মোবাইলে আটকে গান শুনতে শুনতে যাতায়াত করতেন তিনি। বাড়িতে যত ক্ষণ থাকতেন, সেই সময়টাতেও ল্যাপটপে
সিনেমা দেখে অথবা গান শুনে কাটাতেন। সেই সময়েও ইয়ারফোন ছিল তাঁর কানের নিত্যসঙ্গী।জোশ জানিয়েছেন, যখন তাঁর বয়স ১৩-১৪ সেই সময় থেকেই ইয়ারফোনে বহুক্ষণ ধরে গান শোনা তাঁর অভ্যেস। বছর খানেক আগে থেকে কানে অল্প অল্প ব্যথা শুরু হয় তাঁর। তিনি তেমন গুরুত্ব দেননি বিষয়টাকে। ইয়ারফোনে যেমন গান শুনছিলেন, তা শুনে যেতে থাকেন।মাস খানেক আগে হঠাতই এক দিন রাত্রে
মারাত্মক বেড়ে যায় তাঁর কানের ব্যথা। ব্যথায় ছটফট করতে থাকেন জোশ। সেই সঙ্গে কানের ছিদ্র থেকে গড়িয়ে নামতে থাকে আঠালো রস। ব্যথায় ছটফট করতে করতে আচমকাই মাথা ঘুরে পড়ে যান জোশ। পরক্ষণেই সংজ্ঞা লোপ পায় তাঁর।‘ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ অডিওলজি’-তে বর্তমানে চিকিৎসা চলছে জোশের। ডাক্তাররা বলছেন, ইয়ারফোনে প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা হাই ভলিউমে গান শোনার
অভ্যেসের ফলে জোশের কানের পর্দা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই কান মিলিয়ে তাঁর শ্রবণশক্তির ৬০ শতাংশ চিরতরে লোপ পেয়েছে। এমনকী অনেকখানি বদলে গিয়েছে তাঁর কানের আকৃতিও। বেড়ে গিয়েছে কানের ছিদ্র। পাশাপাশি গুরুতর ক্ষতি হয়েছে জোশের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতারও। কারণ কান শরীরের ভারসাম্য রক্ষাতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইয়ারফোনে গান শোনার নেশা তো অনেকেরই
থাকে। কী করলে সেই নেশাকে অব্যাহত রেখেও সুস্থ রাখা যায় কানকে? অডিওলজিস্টরা বলছেন, ইয়ারবাডে গান শোনার ক্ষেত্রে ৬০/৬০ নীতি মেনে চলা উচিৎ। অর্থাৎ একটানা ৬০ মিনিট বা এক ঘন্টার বেশি গান না শোনা, এবং মোবাইলের সর্বোচ্চ শব্দমাত্রার ৬০ শতাংশের বেশি ভলিউম না বাড়ানো— এই দুটো নীতি মেনে চললেই সুরক্ষিত থাকবে কান। না হলে, জোশের পরিণতি হতে পারে যে কারো।
ডিসক্লেইমার: প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেজ্ঞের পরামর্শ নিন।