উচ্চ রক্তচাপের কিছু সাধারণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে স্থূলতা, অত্যধিক অ্যালকোহল পান, ধূমপান, একটি আসীন জীবনধারা, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং জেনেটিক্স। উচ্চ রক্তচাপকে নীরব ঘাতকও বলা হয় যা বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে।





উদ্বেগের বিষয় হল, এটি আর এমন একটি অবস্থা নয় যা বয়স্কদের প্রভাবিত করে, এটি তরুণদের মধ্যেও ব্যাপকভাবে রিপোর্ট করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, প্রতি বছর ভারতে প্রায় ২ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের





কারণে। এই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী,দেশের মোট প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের এক তৃতীয়াংশই উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন।চিকিত্সকদের মতে, জীবনযাত্রায় এবং খাদ্যতালিকায় সামান্য কয়েকটি পরিবর্তন আনতে পারলে ওষুধ ছাড়াই উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। কিন্তু কী ভাবে?





চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-





1. ডাবের জল- কেন্দ্রীয় সরকারের হিসাব অনুযায়ী আমাদের দেশের শহরাঞ্চলের ৪০ শতাংশ মানুষ হাইপার টেনশনে High Blood Pressureভোগেন। তার উপর শহরের দ্রুত জীবন, জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবণতা, কম ঘুম, কম বিশ্রাম, উদ্যম জীবনযাত্রা, ইঁদুর দৌড়ের প্রতিযোগিতা কাজের চাপের ফলে নিজের অভ্যন্তরীণ যত্ন নেওয়ারও সময় নেই। ফলে হাই ব্লাড প্রেশারের সম্ভাবনাও বাড়ে। গরমে কষ্ট বাড়ে আরও বেশি। এক্ষেত্রে নিয়মিত ওষুধ তো খাবেনই সঙ্গে প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডাবের জল খান। সমীক্ষা বলছে যাঁরা নিয়মিত ডাবের জল





খান তাঁদের সিস্টোলিক ব্লাড প্রেশার ৭১ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। পটাশিয়াম যুক্ত এই পানীয় শরীরকে ঠান্ডা রাখতেও সাহায্য করে।
2. বেদানার রস- বেদানা অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর। এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ভালো কোলেস্টরল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। নিয়মিত বেদানার রস খেলে হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে। সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টোলিক চাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে বেদানায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এর নিয়মিত সেবনে উচ্চরক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে।
3. জবা ফুলের চা- আজকাল হার্বাল চা খাওয়ার বেশ চল হয়েছে। এরকমই একটি হার্বাল চা হল জবা ফুলের চা বা হিবিসকাস টি। এটি গরম বা ঠান্ডা দুই রকমভাবেই পান করা যায়। রক্তচাপ কমাতে এটি দারুণ কার্যকর। যাঁদের শরীরের কোলেস্টেরল বেশি থাকে সাধারণত তাঁদেরই হাই ব্লাড প্রেশার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জবা ফুলে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এর সাহায্যে শরীরের কোলেস্টরল কমে। ফলে ব্লাড





প্রেশারও কম হয়। কিডনি, মূত্রাশয়, মূত্রনালীতে সংক্রমণের হাত থেকেও রক্ষা করতে ওস্তাদ এই জবা ফুলের চা। এতে থাকা ভরপুর ভিটামিন সি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সাহায্য করে ওজন কমাতেও। জবা ফুলের চা তৈরি করা বেশ সহজ। জবার তাজা পাপড়ি ভালো করে ধুযে নিন। জল ফুটিয়ে তাতে পাপড়িগুলি দিয়ে দিন। আঁচ বন্ধ করে পাত্রটি ঢাকা দিয়ে দিন। মিনিট কয়েক পরে ঢাকনা সরিয়ে নিলে দেখবেন জবার পাপড়ির লাল রং ফিকে হয়ে গেছে। এবং জলটি লাল হয়ে গেছে। কাপে সেই জল ছেঁকে নিন। স্বাদ আনতে সামান্য পাতিলেবুর রস





দিতে পারেন। গরম চায়ের বদলে আইস টি হিসেবেও পান করতে পারেন জবার চা। জবার পাপড়ির লিকার ঠান্ডা করে নিন। গ্লাসে বরফ দিয়ে তাতে ঠান্ডা লিকারটি দিয়ে দিন। ইচ্ছে হলে লেবুর রস আর পুদিনা পাতা মিশিয়ে দিন। ব্যস তৈরি হযে গেল হেলদি হিবিসকাস আইস টি।
4. মধু- প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ মতে, হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখতে মধু অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। ১ কাপ উষ্ণ জলে ১ চামচ মধুর সঙ্গে ৮-১০ ফোঁটা অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে খেতে পারলে রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।









