ফুলের নাম-“মরিয়ম ফুল”, মরু অঞ্চলের ক্ষণজন্মা উদ্ভিদ মরিয়ম ফুল, বৈজ্ঞানিক নাম- Anastatica hierochuntica । এই ফুলকে হযরত ঈসা (আঃ) এর মায়ের নাম নামানুসারে “মরিয়ম ফুল বা মরিয়ম বুটি”, নবী সাঃ এর কন্যা ফাতিমার নামানুসারে “ফাতিমার হাত বা হ্যান্ড অব





ফাতিমা” এবং এর বৈশিষ্ট্য অনুসারে “পুনরুত্থান উদ্ভিদ” বলা হয়। কারণ এই ফুল দেখতে খটখটে শুকনো ও মরা মনে হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পানিতে ভিজিয়ে রাখলেই তরতর করে পাপড়ি মেলতে শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যেই ফুটন্ত ফুলের মতো তাজা আর পরিপূর্ণ প্রস্ফুটিত হয়ে যায়। এ এক আশ্চর্য ফুল । মধ্যপ্রাচ্য ও সাব-সাহারার বিস্তীর্ণ মরুময় অঞ্চলে বছরের পর বছর শুকনো গাছটি মাটি আঁকড়ে থাকে। মরুভূমির





অসহনীয় গরমের মধ্যে থাকা শুকনো এই গাছ নির্জীব পাথরের মধ্যে কোন পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় না ।মাঝে মধ্যে প্রচন্ড ধুলিঝড় শুকনো এই গাছকে উপড়ে ফেলে, এতদিন ধরে আঁকড়ে থাকা জায়গাটি থেকে নিয়ে যায় বহু দূরে। এভাবেই হয়তো কেটে যায় আরো অনেকগুলো বছর। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে বৃষ্টির পরশ পেলে জীবন ফিরে পায় এবং এর বংশ বিস্তার ঘটে । বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা এই গাছের মতো করে বোধহয়





আর কোনো গাছ উপভোগ করতে জানে না । বছরের পর বছর ফলের ভিতর আগলে রাখা বীজ বৃষ্টির ফোঁটার আঘাতে মাটিতে ছড়িয়ে যায় । কয়েক ঘন্টার মধ্যে বীজ থেকে অঙ্কুরোদগম হয়। আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নতুন পাতা গজায়, ফুল ও ফল হয় । এসময় গাছগুলো প্রায় ৬ ইঞ্চি লম্বা হয় । সূর্যের প্রবল উত্তাপের কাছে আবার হার মেনে মরে যায় । পুনরুজ্জীবন এর জন্য দরকার আরেক পশলা বৃষ্টির যদি তা





কয়েকশ বছর পরেও হয় । শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এর ব্যবহার হয়ে আসছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। অত্যন্ত দূর্লভ এই ফুলের উপকারিতা বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের প্রসবকালীন সময়ে এই ফুলের ব্যবহার একরকম আবশ্যক। ঐতিহ্যবাহী ধাত্রীরা শত শত বছর ধরে প্রসবকালীন সময়ে মায়ের বেদনা লাঘব করার জন্য এই ফুলের ব্যবহার করছেন। মহানবীর যুগে প্রচলিত বিবি মরিয়মের ইতিহাস





থেকে জানা যায় যে এই কুদরতি ফুলটি আল্লাহর রহমতে বেবি কন্সিভ করতে সহায়তা করে এবং লেবার পেইন কমাতে সাহায্য করে। শুধু আমাদের দেশেই নয়, পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই এর ব্যবহার হয়ে থাকে। ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন মনীষী এর ব্যবহারের উপর অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছেন এবং বাতলে দিয়েছেন এর ব্যবহারের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতিসমূহ। খ্রীষ্ট ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ বাইবেলেও এর কথা বর্ণনা করা





হয়েছে। এ ফুলের মধ্যে উপাদান: এই ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, দস্তা এবং লোহা। বিশেষত, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম একসঙ্গে পেশী সংকোচন নিয়ন্ত্রণ করে এর কোন নেতিবাচক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।





কী কাজ করে? :
প্রসবকালীন সময় এই ফুল বিশেষ প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করতে হয়। এতে প্রসূতি মায়ের প্রবস বদেনা লাঘব হয় এবং দ্রুত ও সহজে ডেলিভারী সম্পন্ন করা যায়।





ব্যবহারের নিয়ম:
ক) বাচ্চা জন্মের সময় ডেলিভারি পেইন উঠে তখন ফুলটিকে ডেলিভারি রুমে কোন খোলা বাসনে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে (কুসুম গরম পানি না থাকলে ঠান্ডা পানি হলেও হবে, গরম পানি হলে বেশী ভাল)। ভিজালে ফুলটি আস্তে আস্তে ফুটতে থাকবে এবং যার ডেলিভারি হবে তার জড়ায়ুর মুখ খুলতে থাকবে এবং ব্যাথা বাড়বে। যতই ভিজতে থাকবে ও প্রষ্ফুটিত হতে থাকবে আল্লাহ্ তাআলার দয়ায় মরিয়ম বিবির ফুলের বরকতে বাচ্চার জন্ম খুব সহজ ভাবেই হবে।





খ) বেবী হয়ে গেলে পানি থেকে ফুলটি উঠিয়ে ফেলতে হয়।এবং এই ফুলের কাজ শেষে পানি থেকে উঠিয়ে রাখলে আবার আগের মত ছোট হয় কারন এটি একাধিক বার ব্যবহারযোগ্য।
গ) আর যারা বাচ্চা কন্সিভ করতে চান তারা শেকড় ভিজিয়ে রেখে তার পানিটা তাহাজ্জুদ নামাজের আগে এবং পরে নিয়ত করে খাবেন এবং এটি অবশ্যই ফযরের নামাজ পড়ার আগেই খেয়ে নিতে হবে।









