প্রতিদিন আমরা যে সব খাবার খাই তা সরাসরি আমাদের ত্বকে প্রভাব ফেলে। তাই সুস্থ ত্বক পাওয়ার জন্য সঠিক খাবার বেছে নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। কিছু কিছু খাবার আছে যা ত্বকের রুক্ষভাব, প্রাণহীন ত্বককে প্রাণোজ্জ্বল করে।সেই সঙ্গে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফর্সা করার
ক্ষমতাও রাখে। যে খাবারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে থাকে সে ধরণের খাবার খেলে ত্বক অপেক্ষাকৃত ফর্সা হওয়ার সম্ভবনা থাকে।অনেকেই ত্বক ফর্সা করতে স্কিন হোয়াইটনিং চিকিৎসা করাতে চান। তবে এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কিন্তু কিছু সুপার ফুড খেয়েই আপনি আপনার ত্বক ফর্সা করতে পারেন।ত্বক পরিচর্যায় নতুন পদ্ধতি, ভাতের মাড় আর চাল ধোয়া পানি।ওজন বাড়ানোতে
ভূমিকা রাখায় অনেকেই ভাত এড়িয়ে চলেন। তবে ত্বক ও চুল ভালো রাখতে এর উপকারিতা সম্পর্কে জানলে কেউই এড়িয়ে যেতে পারবেন না।রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ‘কসমেটোলজিস্ট’ ভার্তি তানেজা বলেন, “ত্বকে ব্যবহারের ফলে ভাতের বার্ধক্যরোধী উপাদান দারুণ কাজ করে। রোদপোড়ায় যে ক্ষতি হয় সেটা পুষিয়ে ত্বকে নবযৌবন দান করতেপারে ভাত। সেই
সঙ্গে উজ্জ্বলতাও বাড়ায়। আর স্বল্প মাত্রার এক্সফলিয়েটর হিসেবে প্রতিদিনই ব্যবহার করা যায়।” ভারতীয় রূপবিশেষজ্ঞ এবং ‘নেইচারোপ্যাথিক’ ডা. নিবেদিতা মাহান্দ্রু জানান, ভাতের মাড় বা চালের পানি ব্যবহার করা একটি প্রাচীন পদ্ধতি যা জাপান, চায়না এবং কোরিয়ানরা জনপ্রিয় করে। আর বর্তমানে এই পদ্ধতি জনপ্রিয় করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার রূপবিশেষজ্ঞরা। রাইস বা ভাত দিয়ে তৈরি সিরাম, ক্রিম, টোনার, স্ক্রাবার প্রতিদিন ব্যবহার করা যায়। আর ফ্রিজারে রাখা যায় ১০ থেকে ১৫ দিন। সঠিকভাবে চালের পানি তৈরি
করতে তানেজা, ৩০ মিনিট চাল ভিজিয়ে রাখার বা ভাত রান্না করে তা থেকে মাড় আলাদা করার পরামর্শ দেন।এই পানি স্প্রেয়ের বোতলে করে রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা যায়। ত্বক সুন্দর রাখতে ও চুল কন্ডিশনিং করতে এই পানি ব্যবহার করতে পারেন। শেষবার চুল ধোয়ার আগে চালের পানি চুলে মেখে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। মাস্ক মুখের মাস্ক তৈরি করতে চালের গুঁড়া ব্যবহার করা যায়। এটা খুব ভালো এক্সফলিয়েটর।এক টেবিল-চামচ বেসন, চালের গুঁড়া, এক চিমটি হলুদ এবং কয়েক
ফোঁটা দুধ ভালো ভাবে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে মেখে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তারপর আলতো মালিশ করে ত্বক স্ক্রাব করে ধুয়ে ফেলুন। তানেজা বলেন, “অনেক ব্র্যান্ড ‘রাইস পেপার’ বিক্রি করে থাকলেও মাড় ও চালের গুঁড়া একই ফলাফল দিতে সাহায্য করে।” মাহান্দ্রু জানান, যেহেতু এটা সব ধরনের ত্বক ও চুলের জন্য নিরাপদ, তবে তা খাঁটি ও পাতলা ভাবে ব্যবহার করা বেশি সুবিধাজনক। ব্যবহার পদ্ধতি: পাতলা করা তাজা চাল ধোয়া পানি চুল ধুতে ব্যবহার করুন। চাল ধোয়া পানি ফার্মেন্টটেড বা গাজানোর
পর ব্যবহার করলে খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। চুল ভালো রাখতে চালের পানি ও অ্যাভোকাডো মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করা যায়। চাল ধোয়া পানি অতি পাতলা করে ‘মিস্ট স্প্রে’ এবং সূর্যের আলোর রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ফেইশল টিস্যু চাল ধোয়া পানিতে ভিজিয়ে ১০ মিনিট মাস্কের মতো ব্যবহার করা যায়।বলিরেখা দূর করতে চালের গুঁড়াতে নারিকেল, কাঠবাদাম বা ভিটামিন ইতেল যোগ করুন।এক ঘণ্টা চাল পানিতে ডুবিয়ে রেখে তাতে ননী-সহ কাঁচা-দুধ যোগ করুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এতে মধু ও
বেশন যোগ করে স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যায়। দুধের সর ও ভাতের মাড়ের সঙ্গে অ্যালো জেল, রোজ এসেনশল অয়েল মিশিয়ে প্রতিদিন ত্বকে নাইট ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করুন। ভাত একটু বেশি পানি দিয়ে রান্না করুন। অ্যান্টি এইজিং ক্রিম হিসেবে এটা ব্যবহার করুন। চাল ধোয়া পানি বরফের ট্রেতে বরফ করে নিন। মশার কামড়, লালচে ভাব এবং একজিমা দূর করতে এই বরফ ব্যবহার করা যায়। দপোড়াভাব কমাতে চাল ধোয়া পানিতে হাত ও পা ডুবিয়ে রাখুন। ত্বক ও চুল ভালো রাখতে চাল ধোয়া পানি ব্যবহার করা ভালো।
ডিসক্লেইমার: প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেজ্ঞের পরামর্শ নিন।