শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ১০টি সহজ টিপস শিখে নিন
Image: google

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ১০টি সহজ টিপস শিখে নিন

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ১০টি সহজ টিপস শিখে নিন- অনেক বাবা-মা শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েন।সাধারণত তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা প্রবল হয়ে দেখা দেয়। অনেক অভিভাবকই বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিশুদের কোষ্ঠ

কাঠিন্যের এই সমস্যাটি বুঝতে পারেন না। তাই শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্যের বিষয়ে বাবা-মার সচেতন হওয়া খুবই প্রয়োজন। চলুন তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক- 1. শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য : কোনো শিশু যদি সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ করে ও মল যদি খুব শক্ত হয়ে মলদ্বারে ব্যথা সৃষ্টি করে থাকে তবে তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। 2. কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের লক্ষণ: মাঝেমধ্যে পেটে ব্যথা হয়। পেট

শক্ত হয়ে থাকা বা পেট ফুলে থাকা। পেটের ওপর হাত দিলে শক্ত মলগুলো অনুভূত হওয়া। মলদ্বার আর্দ্র থাকবে এবং স্পিংটার খোলা থাকবে। ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়া। শিশু খেতে না চাওয়া। খাওয়া-দাওয়ায় অনীহা। বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া। ওজন কমে যাওয়া

3 .শিশুর কোষ্ঠ্যকাঠিন্য রোধে করনীয়:
১. আঁশ জাতীয় খাবার খাওয়া: শিশুদের খাদ্যতালিকায় আঁশ জাতীয় খাবার রাখুন।আঁশ হলো খাবারের সেই অংশ, যা পরিপাক হয় না এবং খাদ্য গ্রহণের পর অবশেষ হিসেবে জমা হয়ে মল তৈরি করে। খাদ্যের আঁশ অংশটুকু হজম না হওয়ার কারণে এগুলো পরিপাক তন্ত্রের বেশ কিছু জলীয় অংশ শোষণ করে ধরে রাখে এবং এই জলীয় অংশসহ এগুলো মলের সাথে বের হয়ে আসে। এতে মল নরম

হয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ হয়। শাক-কচুশাক, মিষ্টি আলুর শাক, কলমিশাক, পুদিনা পাতা, পুঁইশাক, মুলাশাক, ডাঁটাশাক, লাউয়ের ও মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদিতে প্রচুর আঁশ রয়েছে।
২. বেশি পরিমানে পানি পান পানি খাবার হজমে সহায়তা করে। বেশি পানি খেলে মলাশয় পরিষ্কার হয় এবং শরীর নতুন করে খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে সহজেই। প্রতিদিন শিশুকে বেশি করে পানি খাওয়াতে হবে।শিশু পানি খেতে না চাইলে শরবত, তাজা ফলের জুস বা স্যুপ খাওয়ানো যেতে পারে।
৩. শিশুর মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তোলা: শিশুকে মলত্যাগ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। শিশুকে বকাঝকা না করে প্রতিদিন মলত্যাগের জন্য পুরস্কারের মাধ্যমে তাকে উৎসাহিত করা যেতে পারে। অনেক বাচ্চাই মলত্যাগ করার সময় একটু প্রাইভেসি পছন্দ করে।

টয়লেট ব্যবহার করতে শেখেনি এমন বাচ্চাকে ঘরের এক কর্নারে পটিতে বসিয়ে দিন যাতে সে প্রাইভেসি ফিল করে।
৪. শিশুর পছন্দের বাথরুমের ব্যবস্থা করা: অনেক শিশুই তার নির্দিষ্ট পছন্দের বাথরুম ছাড়া অন্য কোথাও বাথরুম করতে বা যেতে পছন্দ করে না। শিশুকে তার পছন্দের বাথরুম ব্যবহার করতে দিন।
৫. ফাস্ট ফুড বা মাংস জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা: অনেক শিশুরই ফাস্ট ফুড এবং মাংস জাতীয় খাবার খুবই প্রিয়।কোষ্ঠকাঠিন্য রোধের জন্য শিশুকে এজাতীয় খাবার কম দেয়া উচিত। এ বিষয়ে মা-বাবাকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।
৬. দুধের উপর নির্ভশীলতা কমিয়ে আনা: অনেক শিশুই দুধ খেতে পছন্দ করে।অনেক শিশুকেই দুধ থাওয়ার কারনে দেখা যায় অন্য খাবার খেতে চায় না, বিশেষ করে আঁশ জাতীয় খাবার। এক বছরের বেশী বয়সের শিশুকে দৈনিক আধা লিটার (১৬ আউন্স) থেকে

পৌনে এক লিটার (২৪ আউন্স) এর বেশি দুধ খেতে দেয়া ঠিক না। কারণ দুধে এতো পুষ্টিগুন থাকে যার কারনে বেশি দুধ খেলে শিশু অন্য কোন খাবার খেতে চায় না। ফলে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। এজন্য শিশুকে পরিমিত পরিমাণ দুধের সাথে অন্য খাবার বিশেষ করে আশঁ জাতীয় খাবার খাওয়াতে উৎসাহিত করতে হবে।
৭. শারীরিক কার্যক্রম: শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে প্রতিদিন তার খেলাধুলার ব্যবস্থা করা উচিত। হাত পা নাড়াচাড়া করে খেলছে কিনা সেদিকে নজর রাখুন। শিশু সারাদিন যদি শুয়ে বসে কাটায় তাহলে তার নড়াচড়া কম হবে। সারাদিনে কমপক্ষে ১ ঘন্টা হলেও শিশুর

শারীরিক কার্যক্রম না হলে অন্ত্রে নড়াচড়াও স্বাভাবিকভাবে হবে না। তাই এই ব্যাপারে অবশ্যই খেয়াল রাখুন।
৮. ঔষধের প্রতি খেয়াল রাখুন: সাধারন জ্বর, সর্দি, কাশি বা যেকোনো রোগের জন্য বাচ্চাকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাওয়ানো যেতে পারে, তবে লক্ষ্য রাখুন কোনো ঔষধের কারনে শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে কিনা। যদি হয়, তাহলে তা বন্ধ করুন এবং ডাক্তারকে জানান। এছাড়া ডাক্তারের কাছ থেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের এমন কিছু ঔষধের পরামর্শ নিন যা বাচ্চার উপর ভালো কাজ করে। ৯.

কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে এমন কিছু উপাদান: শিশুর জন্য রাতের খাওয়ার পর ইসুপগুলের ভূষি গরম দুধে মিশিয়ে খাওয়ানো, অথবা শিশুকে খেজুর খাওয়াতে পারেন। খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টি গুন যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে।
১০. শিশুদের পেট নরম করার ব্যবস্থা করুন: শিশুদের লেক্সেটিভ বা পায়খানা নরম করার ঔষধ দিয়ে হলেও কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করার চেষ্টা করুন। এসব খুব সহজেই কাজ করে এবং নিরাপদও। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াবেন এবং পুরো ডোজ শেষ করবেন। কোষ্ঠকাঠিন্যে ভালো হওয়ার সাথে সাথেই হঠাৎ করে ঔষধ বন্ধ না করে আস্তে আস্তে বন্ধ করুন।

Check Also

তরুণদের মাঝে হৃদরোগ বাড়ছে যে কারণে

তরুণদের মাঝে হৃদরোগ বাড়ছে যে কারণে

তরুণদের মধ্যে বেড়ে চলেছে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *