তীব্র দাবদাহ সারা বাংলা জুড়ে। এক্ষুনি এর থেকে নিস্তার নেই। বরং আগামী আরো কয়েক দিন রয়েছে তাপ প্রবাহের সর্তকতা। এই অসহ্য গরমে টেকা বড় দায় হয়ে পড়েছে। প্রখর রৌদ্রে জ্বালাপোড়া অবস্থা ঘরে বাইরে সর্বত্র। রাস্তায় বেরোনোর কথা তো ছেড়েই দিলাম, ঘরের মধ্যেই
ফ্যানের বাতাসে নেই কোনো রকম স্বস্তি। একমাত্র এসিই আপনাকে আরাম দিতে পারে। কিন্তু আমাদের মধ্যবিত্ত বাঙ্গালীদের সবার বাড়িতে নেই এসি, সামর্থ্যও নেই অধিকাংশের। তাই এসির কথা ভুলে যান, প্রাকৃতিক নিয়মে কিভাবে ঘরকে ঠান্ডা রাখা যায় সে নিয়ে ভাবুন। প্রাকৃতিক নিয়মেই ঘরকে অনেকটাই আরামদায়ক রাখা সম্ভব, যদি এসির সাথে তুলনা কখনই নয়। চলুন দেখে নেওয়া যাক কি কি উপায়ে প্রাকৃতিক
নিয়মে ঘর ঠান্ডা রাখা সম্ভব। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক – ১) ঘরকে ঠান্ডা রাখতে হলে দুপুরের কড়া রোদকে কখনোই ঘরে ঢুকতে দেবেন না। কড়া রোদের সময় দরজা জানালা সব জায়গায় ভারী পর্দা লাগিয়ে রাখুন কিন্তু বৈকাল হওয়ার সাথে সাথেই সেগুলি খুলে ফেলুন যাতে ঠান্ডা বাতাস ঢুকতে পারে। ২) রাতের বেলায় টেবিল ফ্যান অথবা পোর্টেবল ফ্যান কে জানলার কাছে লাগিয়ে বাইরের ঠান্ডা হওয়া বাড়িতে ঢোকান। যাতে খুব তাড়াতাড়ি ভিতরের ভ্যাপসা গরম দূর হয়ে আরামদায়ক হবে। ৩) এসি ছাড়াও এসির মত আরামদায়ক ঠান্ডা হাওয়া পেতে হলে টেবিল
ফ্যানের সামনে গামলাতে করে বরফ রেখে অথবা বোতলে বরফ জমিয়ে সেই বোতল টেবিল ফ্যানের সামনে রেখে হাওয়া গায়ে নিন। ৪) বিনা কারণে ঘরের ভিতরে কোন রকম ইলেকট্রিক দ্রব্য চালিয়ে রাখবেন। টিভি, আলো, কম্পিউটার ইত্যাদি বিনা কারণে চালানো থাকলে ঘর বেশি গরম হয়ে ওঠার প্রবণতা দেখা দেয়। এতে ইলেকট্রিক বিলও কমবে, ঘর ঠান্ডা থাকবে অনেকটা। ৫) প্রয়োজন ছাড়া বেশিক্ষণ গ্যাসের ওভেন জ্বালিয়ে রাখবেন না। এতে গ্যাসের খরচও বাড়ে এবং ঘর বীভৎস গরম হয়। ৬) বাড়ি তৈরির সময় লাগান হিট প্রটেক্টিভ উইন্ডো ফিল্ম।
জানালার কাঁচের মধ্য দিয়ে তাপ অনেকটাই শোষিত হয়। যার কারণে ঘর দ্রুত গরম হয়ে ওঠে। যেসব জানালায় সূর্যের আলো সরাসরি পরে সেখানে হিট প্রটেক্টিং উইন্ডো ফিল্ম লাগান। যাতে তাপ শোষণ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এছাড়াও জানালার বাইরের দিকে কাঁচের মধ্যে সাদা রং করে নিতে পারেন। যার ফলে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে কম তাপ শোষণ করবে। ৭) অত্যাধিক তাপমাত্রা থেকে বাঁচার সব থেকে বড় উপায় হলো গাছ। নিজের বাড়ি এবং প্রকৃতিকুলকে ঠান্ডা রাখতে বাড়ির এদিক ওদিক চারিদিকে লাগান গাছ। যাতে করে সরাসরি
সূর্যের আলো আপনার বাড়িতে এসে পড়বে না এবং গাছের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার সময় আপনার বাড়ি অনেকটাই ঠান্ডা ও দূষণমুক্ত থাকবে। ৮) গরমের সময়ে ওভারহেড ট্যাঙ্কে বেশি জল রাখবেন না। জল তাড়াতাড়ি তেতে আগুন হয়ে যায়। গরম জলের ভাপ সব সময়েই বেশি। তাই সেই জল যখন ব্যবহার করবেন তার গরম বাষ্প ঘরও গরম করে তুলবে। তাই প্রয়োজন মতো অল্প অল্প জল তুলে ব্যবহার করুন। এতে জলটাও ঠান্ডা পাওয়া যাবে। ৯) বেশ কিছু ইন্ডোর প্লান্ট রয়েছে, যা বাড়ির মধ্যে রাখলে ঘর ঠান্ডা থাকে। যেমন অ্যালোভেরা, বস্টন ফার্ন,
স্নেক প্লান্ট, উইপিং ফিগ, অ্যারিকা পাম ইত্যাদি। ঘরের বাতাসকেও শুদ্ধ করে এই গাছগুলি। ১০) বাড়ির মধ্যে কয়েকটি জায়গায় বড় মাটির মালসায় জল রাখুন ও তাতে কয়েকটি সুগন্ধি ফুল ফেলে দিন। দিনে দু’তিনবার জল পালটান। ঠান্ডা জলের বাষ্পে ঘর ঠান্ডা থাকবে। ভ্যাপসা গন্ধও হবে না।
ডিসক্লেইমার: প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেজ্ঞের পরামর্শ নিন।