ফ্যাটি লিভার ডিজিজ নিয়ে যত কম কথা বলা যায় ততই ভালো। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, এই রোগ থাকলে কখন যে শরীরের ভিতর বাড়তে থাকবে তা বোঝা দায়। তাই প্রতিটি মানুষকে এই অসুখ নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। আমাদের সারা শরীরেই জমতে পারে ফ্যাট। এবার সেই
ফ্যাট গিয়ে পেটেও জমে। পেটে জমা ফ্যাটের নাম হল ভুঁড়ি। এবার ভুঁড়ি থাকলে যে সমস্যা তৈরি হবে, এটা বুঝে নিতে হবে। এক্ষেত্রে পেটের মেদের অর্থ হল অন্দরে বিভিন্ন অঙ্গে জমেছে ফ্যাট। আর সেটাই উচিত নয়। এক্ষেত্রে লিভারেও জমে ফ্যাট। আর লিভারে ফ্য়াট জমলে নানা অসুখের আশঙ্কা বাড়ে। তাই ফ্যাটি লিভার ডিজিজ নিয়ে সতর্ক হতে হবে। এই প্রসঙ্গে কলকাতার ঢাকুরিয়া আমরি হাসাপাতালের বিশিষ্ট
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, এখন বহু মানুষের এই রোগটি আছে। এবার এই অসুখটি থাকলে বেশিরভাগ সময় লক্ষণ থাকে না। তবে সমস্যা কিছুটা বাড়লে পেটে ব্যথা হয়। বিশেষত পেটের ডানদিকে ব্যথা, গ্যাসের মতো অনুভূতি থাকে। এটাই হল মূলত এই রোগের উপসর্গ । ডা: রুদ্রজিৎ পাল আরও জানালেন, এই সমস্যা শরীরের ভিতর নিজের থেকেই বাড়তে পারে। তখন লিভার সিরোসিস থেকে লিভার
ক্যানসার হতে পারে। তাই প্রতিটি মানুষকে এই ফ্যাটি লিভার ডিজিজ নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। তবেই আপনি ভালো থাকতে পারবেন। জেনে নেওয়া যাক কোন কোন অভ্যাস ছাড়লে এই সমস্যা কমতে পারে-
১. ফ্যাটি লিভার কমাতে আলস্য ছাড়ুন- ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, এখন বেশিরভাগ মানুষ কোনও শারীরিক কসরত করেন না। এবার এই কারণে বাড়ছে ওজন। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে শরীরের উপর। তাই এই বিষয়টা প্রতিটি মানুষকে মাথায় রাখতে হবে। তবেই ভালো
থাকতে পারবেন। অন্যথায় সমস্যা বাড়বে কমবে না। এটা মাথায় রাখতেই হবে। এক্ষেত্রে দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম (Exercise) বা হাঁটা (Walking) প্রয়োজন। তবেই ভালো থাকতে পারবেন।
২. ফাস্ট ফুড খাওয়া ছাড়তে হবে- ফ্যাটি লিভার ডিজিজ থাকলে ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, আমাদের মধ্যে বহু মানুষ এখন রোজকার রোজ খেয়ে থাকেন ফাস্ট ফুড (Fast Food)। এবার ফাস্ট ফুড খাওয়া কিন্তু চলবে না। আসলে ফাস্ট ফুড খেলে শরীরের উপর তার প্রভাব পড়ে।
এরমধ্যে রয়েছে ট্রান্স ফ্যাট ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এই দুই শরীরের পক্ষে খারাপ। তাই দূরে থাকুন।
৩. ফ্যাটি লিভার ডিজিজে মদ্যপান নয়- ডা: রুদ্রজিৎ পাল জানান, আপনাকে মদ্যপান থেকে দূরে যেতে হবে। এক্ষেত্রে মদ্যপানের কারণে হয়ে থাকে Alcoholic Fatty Liver Disease. তাই সতর্ক থাকুন। যাঁদের ফ্যাটি লিভার রয়েছে, তাঁরা মদ থেকে দূরে থাকতে শিখুন। তবেই ভালো থাকতে পারবেন।
৪. রিফাইনড কার্ব থেকে দূরে থাকুন ফ্যাটি লিভার রোগীরা আসলে বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে মানুষ রিফাইনড কার্ব যেমন চিনি, ময়দা খেয়ে
চলেছেন। এবার দেখা গিয়েছে যে এই খাবারাগুলি শরীরে গিয়ে ফ্যাটে পরিবর্তিত হয়ে যায়। তাই দূরে থাকুন। নইলে সমস্যা বাড়বে।
৫. কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া ছাড়ুন- ফ্যাটি লিভার ডিজিজ থাকলে ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, আপনাকে কোল্ড ড্রিংকস থেকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে কোল্ড ড্রিংকসের মধ্যে থাকে Fructose. এটা শরীরে ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়ে যেতে পারে। তাই আপনাকে কোল্ড ড্রিংকস থেকে দূরে চলে যেতে হবে।
বিদ্র: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।