শীত মানেই ধনে পাতার নানা পদের ভর্তা, তরকারি, চাটনি। উফ ! সে কি মজা খেতে তাই না? খাবারকে সুস্বাদু করতে ধনে পাতার জুড়ি মেলা ভার। তবে আপনি জানেন কি এই ধনে পাতা শরীরে কত রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে করে। অতিরক্তি ধনে পাতা খাওয়ার ফলে শরীর দিনে দিনে অসুস্থ্য হয়ে যায়, ডায়রিয়া, বুকে ব্যাথা, বাতের ব্যাথা, উচ্চরক্তচাপসহ আরো নানা প্রকার সমস্যা সৃষ্টি হয়।
ধনে পাতায় রয়েছে এক ধরণের ভেষজ তেল যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে অতি দ্রুত আক্রান্ত করে ফেলে। এটি অতিরিক্ত খেলে লিভারের কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। ফলে লিভার তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এছাড়াও ধনে পাতায় রয়েছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা লিভারের জন্য সাময়িক উপকারি হলেও কিন্তু অতিরিক্ত ধনে পাতা লিভারের জন্য মারত্মক ক্ষতিকর।
যাদের শ্বাসকষ্ট রয়েছে তারা এই ধনে পাতা খাওয়া হতে বিরত থাকুন। কেননা ধনে পাতা আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা করে যার ফলে ফুসফুসে অ্যাজমার মত সমস্যা নতুন করে সৃষ্টি হয়।অনেক সময় এই ধনে পাতা খেলেও ছোট ছোট শ্বাস কষ্ট গ্রহণ করতেও সমস্যা হয়ে থাকে।
ধনেপাতা পেটের গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সহায়ক। কিন্তু আপনি যদি বেশি পরিমাণে ধনে পাতা খেয়ে ফেলেন তাহলে পাকস্থলীতে হজম প্রক্রিয়াতে সমস্যা সৃ্ষ্টি হয়। যদি আপনি এক সপ্তাহে ২০০ গ্রাম পরিমাণ ধনেপাতা খানা তাহলে গ্যাসের ব্যথা, পেটের ব্যথা, বমি হওয়া, পাতলা পায়খানা, পেট ফুলে ওঠাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অধিক পরিমাণে ধনে পাতা খেলে তা হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। যারফলে নিম্নরক্তচাপ দেখা দেয়। এত করে হৃদযন্ত্র এর স্বাস্থ্য নষ্ট হয়। তবে চিকিৎসকরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ধনে পাতা খাওয়ার পরমর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও বেশি পরিমাণে ধনে পাতা খেলে হালকা মাথা ব্যাথা দেখা দিতে পারে।
অনেক সময় বেশি পরিমাণে ধনে পাতা খাওয়ার ফলে বুকে ব্যথা হয়। এটি শুধু মাত্র ব্যথাই সৃষ্টি করে না সেই সাথে একটা দীর্ঘস্থায়ী অস্বস্থিকর অবস্থারও সৃষ্টি করে। তাই এই সমস্যা হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য অল্প পরিমাণে ধনেপাতা খেতে পারেন, তবে ভুলেও বেশি পরিমাণে নয়।
ধনে পাতা খেলে পেটের ভুটভাট দূর হলেও বেশি পরিমাণে ধনে পাতা খাওয়ার ফলে ডায়রিয়ার মত রোগের প্রকোপ বাড়ে। আর ডায়রিয়া হতে হয় ডিহাইড্রেশনের মত সমস্যা। সবুজ ধনে পাতায় ওষুধি উপদান রয়েছে। যা ত্বককে সূর্য
রশ্নি হতে বাচিয়ে সংবেদনশীল করে থাকে। তবে অতিরিক্ত ধনে পাতা খাওয়ার ফলে সূর্যরশ্নি একবারে শরীরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনা। ফলে শরীর ভিটামিন ডি হতে বঞ্চিত হয়। এ কারণে ত্বকে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।
গর্ভকালীন সময়ে ধনে পাতা একবারে না খাওয়াই উত্তম। এতে করে ভ্রণের বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। ধনে পাতা নারীদের প্রজনন গ্রন্থির কর্মক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে। ফলে অনেক সময় নারীরা বাচ্চা ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তাই বেশি পরিমাণে খাওয়া হতে বিরত থাকুন।
এছাড়াও বেশি পরিমাণে ধনে পাতা খেলে শরীরে চুলকানি, শরীর ফুলে যাওয়া, র্যাশ, শরীর জ্বালাপোড়া, গলা ব্যথা, মুখ লাল হওয়াসহ নানা রকমের শরীরিক সমস্যা দেখা যায়। তাই পরিমিত মাত্রায় ধনে পাতা খান।