প্রতি বছর সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ হার্ট অ্যাটাক বা হৃদযন্ত্রের সমস্যায় মারা যান। শরীরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হৃদযন্ত্র (Heart Health)। বুকের মাঝে ধুকপুক করেছে বলে আমরা সকলে বেঁচে থাকি। হার্ট যদি কোনও কারণে অসুস্থ হয় তবে তা নানা সংকেত দিয়ে আমাদের জানান
দেয়। অনেক সময় আমরা সাধারণ কোনও রোগ ভেবে তা উপেক্ষা করি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ কারণেই হার্ট অ্যাটাক (Heart Health) হয়। চিকিত্সকদের মতে, যদি হার্ট-অ্যাটাক হওয়ার ১ ঘণ্টার মধ্যে চিকিত্সা শুরু করা যায়, তবে ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগী বেঁচে যান। বেঙ্গালুরুক
ফোর্টিস লা ফেম হাসপাতালের ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজির ডিরেক্টর ডাঃ রাজপাল সিং-এর মতে হৃদরোগের (Heart Health) ঝুঁকি এড়াতে বিশেষজ্ঞদের স্বাস্থ্যকর খাদ্য অনুসরণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ভালো ঘুম এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। যেগুলো আপনাকে হৃদরোগ থেকে রক্ষা করতে কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে।
চলুন তাহলে দেখে নিন সেগুলি কী কী-
1. হাসি-খুশি থাকুন- খুশি থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর একটি কার্যকরী উপায়। চিকিৎসকের মতে, হাসি-খুশি থাকা খুবই জরুরি। হাসলে শরীরে এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসৃত হয় যা আপনার রক্তচাপ কমাতে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে। মানসিক চাপকে আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে।
2. দিনে ৪০ মিনিট ব্যায়াম করুন- ডাঃ সিং এর মতে, প্রত্যেক ব্যক্তির প্রতিদিন ৪০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। তিনি যোগ করেন যে সপ্তাহে ৫ বার ব্যায়াম আপনার কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি ওজন হ্রাস, রক্তে শর্করা, রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করার একটি ভালো উপায়। ব্যায়াম আপনার যৌন জীবন উন্নত করতেও সাহায্য করে।
3. আরামদায়ক ঘুম- চিকিৎসকরাও বিশ্রামের জন্য জোর দিতে বলেন। তাঁদের মতে, ভালো ঘুম মানসিক ও হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে। ডাঃ সিং-এর মতে, প্রত্যেক ব্যক্তিকে অবশ্যই ৭-৮ ঘণ্টার ঘুমাতে হবে।
4.ধূমপান এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন- WHO-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ধূমপান ও অ্যালকোহলের কারণে হৃদরোগের বেশিরভাগ ঘটনা বাড়ছে। এই পরিসংখ্যানগুলির দিকে তাকিয়ে, চিকিৎসকের মতে, ধূমপান এবং মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে অধূমপায়ীদের তুলনায় ৫০ শতাংশ আকস্মিক হৃদযন্ত্রের মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। শুধু তাই নয়, এই বদ অভ্যাস উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক এবং হার্ট ফেইলিউরের মতো অন্যান্য রোগের ঝুঁকি বাড়াতেও দায়ী। ডাঃ সিং বলেছেন যে পরিমিত পরিমাণে অ্যালকোহল কার্ডিও-প্রতিরক্ষামূলক, তবে অতিরিক্ত অ্যালকোহল হার্টের জন্য ক্ষতিকারক বলে মনে করা হয়।
5. পরিমিত খান- ডাঃ সিং-এর মতে খাবারে তেলের ব্যবহার কমানো উচিত এবং এটি পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত। তিনি প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি মাসে অলিভ, ক্যানোলা এবং ফ্ল্যাক্সসিডের মতো স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মতে, এর বাইরে প্রাপ্তবয়স্কদের নিয়মিত সবুজ শাক, বাদাম, প্রোটিন খাওয়া উচিত।
6. নিয়মিত চেকআপ করুন- চিকিৎসক বলেন, শারীরিক পরীক্ষা, রক্তের পরিপূর্ণ গণনা, কোলেস্টেরলের মাত্রা, কিডনি, লিভার ও থাইরয়েডের পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা এবং ইসিজি নিয়মিত করতে হবে। ডাক্তার একটি প্রোফাইল এবং লক্ষণগুলির উপর ভিত্তি করে কার্ডিওলজিস্ট দ্বারা পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন। এই নিবন্ধটি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য। এটি কোনওভাবেই কোনো ওষুধ বা চিকিৎসার বিকল্প হতে পারে না। আরও বিস্তারিত জানার জন্য সর্বদা আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
ডিসক্লেইমার: প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেজ্ঞের পরামর্শ নিন।