১০ বছর বয়সের আগেই সন্তানকে শেখানো উচিৎ এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো
Image: google

১০ বছর বয়সের আগেই সন্তানকে শেখানো উচিৎ এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো

আপনি যখন একজন বাবা-মা হয়ে উঠেন, তখন আপনি আপনার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য বড় দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। প্রত্যেক বাবা-মায়েরাই চান তাদের সন্তান যেন সৎ, সহানুভূতিশীল এবং সাহসী হয়। যাইহোক, এই গুণাবলী কোথাও প্রদর্শিত হবে না। একটি ভাল শিক্ষাদীক্ষা

এবং ব্যক্তিগত উদাহরণ সাফল্যের চাবি হতে পারে। আজকে আমরা এমন কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি, যে বিষয়গুলো আপনি আপনার সন্তানকে ১০ বছর বয়সের আগেই শেখাবেন।

চলুন তবে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-

১. ছেলে এবং মেয়ে উভয়কেই সম্মান করতে হবে। সবাই সমান। অন্যদের সম্মান করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য যা আপনার সন্তানের শিক্ষা দেওয়া উচিৎ। সেটা যেকোন লিঙ্গের মানুষকে, সম্মানিত ব্যক্তিদের এমনকি সমবয়সী এবং ছোটদেরকেও সম্মান করতে শিখতে হবে।
২. ভুল করতে ভয় পাবেন না। কারো ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়াটা একটা অসাধারণ প্রতিভা। এছাড়াও নিজের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার সন্তান যাতে ভুল করতে বা হারতে ভয় না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

৩. গ্রেড পয়েন্টের চেয়ে জ্ঞান বেশী গুরুত্বপূর্ণ। মাঝেমধ্যে অভিভাবকেরা বাচ্চার গ্রেড পয়েন্ট খারাপ হলে বা প্রত্যাশা অনুযায়ী না হলে রেগে যায়। যাইহোক, একটা কথা সবসময় মনে রাখতে হবে যে, একটি ভালো গ্রেড সবসময় ভালো জ্ঞানকে নির্দেশ করে না। তাই আপনার সন্তানকে এই শিক্ষাটা দিতে হবে যে, গ্রেড পয়েন্টের চেয়ে জ্ঞান অর্জন করাটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
৪. কোন পিতামাতাই সন্তানের শত্রু হতে পারে না। তাই সন্তানদের উচিৎ তাদের কাছে সাহায্য চাওয়া। সন্তানদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা সহজ বিষয় নয়, বিশেষ করে তার যদি সমবয়সী নিজের বন্ধুদের সাথে থাকে। বেশী জোর করতে যাবেন না। তাদের সাথে এমনভাবে আচরণ করুন যাতে তারা আপনার উপর বিশ্বাস করতে পারে এবং তাদের উপর চিল্লানো ও লম্বা বক্তৃতা দেওয়া এড়িয়ে চলুন।

৫. সবসময় নিজের জন্য দাঁড়াতে প্রস্তুত থাকুন। কিছু বাবা-মা বাচ্চাদের চেয়ে শিক্ষক বা অন্য মানুষের জন্য বেশি সম্মান প্রদর্শন করে থাকেন। এটি ভবিষ্যতে বাচ্চাদের অনিরাপদ এবং নিজের জন্য দাঁড়াতে অক্ষমতা হওয়ার একটা কারণ হতে পারে। আপনার সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন যে শ্রদ্ধা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, কিন্তু নিজেকে রক্ষা করাটাও জরুরী।
৬. আপনার অপছন্দের বিষয়টা কারো কথায় করতে যাবেন না। শিশুরা মনে করে যে বন্ধুদের মধ্যে জনপ্রিয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি অর্জনের জন্য তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করে। আপনার সন্তানকে আপনার ব্যক্তিগত উদাহরণ দেখিয়ে বুঝিয়ে বলুন যে, নিজের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে কেউ একজনের অনুমোদন পাওয়ার চেয়ে সৎ ও শ্রদ্ধাশীল ব্যক্তি হওয়া বেশি মূল্যবান।

৭. আপনি যদি বুঝতে না পারেন তাহলে জিজ্ঞাসা করুন। প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করাটা একেবারে স্বাভাবিক একটা বিষয়। আপনি সবকিছু জানার ভান করার চেয়ে, বুঝতে না পারলে জিজ্ঞাসা করাটা অনেক ভালো। এই বিষয় সম্পর্কে জানার সবচেয়ে সেরা সময় হল শিশুকাল থেকেই।
৮. আপনার যদি ভালো না লাগে তাহলে আপনার শিক্ষককে জানান। একটি শিশুর স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে কথা বলতে ভয় পাওয়া উচিৎ নয়। গ্রেড পয়েন্ট বা শিক্ষককে ভয় পাওয়ার চেয়ে নিজের স্বাস্থ্য বেশী গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সন্তান যেনো এই বিষয় সম্পর্কে জানে তা নিশ্চিত করুন।

৯. পরিবেশকে কদর করুন। আমরা প্রায়শই নোংরা রাস্তা বা পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ করে থাকি। প্রকৃতির কদর করা পরিবার থেকেই শিখতে হবে। নিজের সাথে শুরু করুন এবং আপনার সন্তানকে এই শিক্ষাটা দিন। তাহলে ভালো এবং স্পষ্ট পরিণতি দেখতে পাবেন।
১০. ‘না’ বলতে শিখুন। আপনার সন্তানকে প্রাপ্তবয়স্ক, শিক্ষক এবং এমনকি নিজেকে “না” বলতে শেখান। আপনি যদি একটি দৃঢ় ব্যক্তিত্বের সাথে আপনার সন্তানকে প্রতিপালন করতে চান তাহলে কোন ব্যক্তির কমান্ড মান্য করানো উচিৎ নয়। তবে, এক্ষেত্রে বিষয় সম্পর্কে দেখতে হবে। ‘না’ বলার ক্ষমতা প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে সহজেই আসবে।

Check Also

সন্তান সব সময়ে মুখে মুখে তর্ক করলে আপনি যা করবেন!

সন্তান সব সময়ে মুখে মুখে তর্ক করলে আপনি যা করবেন!

পরিবারের ছোট সদস্যরা মাঝে মধ্যেই ভুল করে। তা সে জেনে হোক কিংবা না যে। এই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *