ওরস্যালাইন মানব শরীরের জন্য নানা উপকার করে থাকে। সাধারণত ডায়রিয়া ও পানিশূন্যতা হতে রাগীকের বাঁচাতে খাবার স্যালাইন বা ওরস্যালাইনের ভূমিকা অপরিসীম। তবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে,
হাসপাতালে বেশিরভাগ রোগীদের ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মে খাবার স্যালাইন বানানো হয় না। আপনি কি জানেন সঠিক নিয়মে খাবার স্যালােইন না বানালে হতে পারে শিশু মৃত্যু! আর এই ভুলের শিকার হয়ে গত বছর ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয় প্রায় ৪০ জন এর বেশি শিশু রোগী, যাদের ভুল নিয়মে স্যালাইন পান করানোর ফলে বেশ কিছু শিশুর মৃত্যু ঘটে। শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মো. হানিফ বিষয়টি নিশ্চিত
করেছেন। তিনি জানান, সঠিক নিয়মে ওরস্যালাইন না খাওয়ানোর ফলে এই দূর্ঘটনা হয়েছে। পুরো বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ওই চিকিৎসক বলেন, আমরা মূলত বমি ও ডায়রিয়া রোগে ওরস্যালাইন ব্যবহার করে থাকি। দেহ হতে যে পরিমাণ লবণ বের হয়ে যায়, তা এই স্যালাইন লবণের সেই স্থানটি পূরণ করে থাকে। তবে অনেক সময় লবণ বেশি বের হয়ে যায়। এছাড়াও আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ওরস্যালাইন প্যাকেট ভাগ করে একটু
পানির সাথে মিশিয়ে রোগীকে খাওয়ালে কনসেনট্রেশন বেশি হয়ে। তবে বর্তমানে আমরা দেখছি যে, কনসেনট্রেশন বেশি হওয়ায় শিশুদের শরীরে লবণের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে শরীরে লবণের যে ভারসাম্য আছে সেটি নষ্ট হয়ে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়ে। এর পাশাপাশি শরীরের অন্যন্যা অংশের উপরও এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে থাকে। এক সময় দেখা যায় যে, এইসব শিশুর কিডনি ফেইল হয়ে যা। তখন তাদর
আইআইসিউতে সার্পোাট নিতে হয। আর এই সমস্যা হওয়ার কারণে গত বছার আমাদের হাসপাতালের ৪০ এরও বেশি শিশু ভর্তি হয়েছিল। এদের মধ্য বেশিরভাগ শিশুরই মৃত্যু হয়েছে! যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ওরস্যালইন মেশানোর যে নিয়ম প্যাকেটে দেওয়া আছে তা অনেকে মানেন না কিংবা খেয়াল করেন না। অনেক সময় ডাক্তাররা বলে দেয় কতটুকু পানির সাথে স্যালাইন মেশাতে হবে। তবে আপনাকে ওরস্যালােইনের
প্যাকেটের নির্দেশিকা মোতাবেক অবশ্যই স্যালইন মেনে চলতে হবে নতুবা বিপদ আসন্ন!
ওরস্যালইন বানানোর সঠিক নিয়ম হলো: আধা লিটার পানির সাথে পুরো ১ প্যাকেট স্যালাইন মেশাতে হবে। কোনভাবেই এর কম বা বেশি করা যাবে না। আর কখনো গরম পানিতেও ওরস্যারইন মেশাবেন না। সেই সাথে আরও জরুরী বিষয় যে, স্যালাইন মেশানোর পর হতে সর্বচ্চ ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত তা পান করতে পারবেন। ১২ ঘণ্টা পার হলে তা ফেলে দিয়ে নতুন করে স্যালাইন বানাবেন।