এই লক্ষণগুলি দেখলেই বুঝবেন আপনার সন্তান জিনিয়াস!

সকলেই নিজের সন্তানকে জিনিয়াস করতে চান। তবে সবার পক্ষে জিনিয়াস হওয়া যে সম্ভব নয়, এটা প্রথম থেকেই বাবা মাকে বুঝে নিতে হবে। আপনার সন্তানের মধ্যে যদি কোনও অসাধারণত্ব থাকে, তাহলে খুবই আনন্দের কথা। কিন্তু সে খুব সাধারণ হলেও তা নিয়ে আপনি

নিজেও যেমন মন খারাপ করবেন না, তেমন সন্তানের উপরেও কোনও ভাবে চাপ তৈরি করবেন না। অথবা অমুকে এটা করতে পারে, তুই কেন পারিস না, এমন কোনও কথা ভুলেও সন্তানের সামনে বলবেন না। এতে সন্তানের মনের উপর অযথা চাপ সৃষ্টি হয়। মনে রাখবেন জোর

করে চাপ দিয়ে কাউকে সচিন তেন্দুলকর বা আবুল কালাম আজাদ বানানো যায় না। যার মধ্যে প্রতিভা থাকে, তার প্রতিভার বিচ্ছুরণ ছোটবেলা থেকেই বোঝা যায়। তবে সব শিশুই নিজের মতো করে অসাধারণ। এমন কিছু গুণ আছে যা দেখে অভিভাবকরা বুঝতে পারবেন যে, তাঁর সন্তান জিনিয়াস।

আপনার সন্তানের কোন কোন গুণ তার জিনিয়াস হওয়ার দিকে ইঙ্গিত দেয়, জেনে নিন-

1. কথাবার্তা ও আবেগপ্রবণতা: সন্তান যদি গল্প শোনার সময় শব্দ ও বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়, ১৪ মাসে বাক্য তৈরি করতে শিখে যায়, তা হলে বুঝতে হবে যে আপনার সন্তানের মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। কিছু কিছু বাচ্চা আবার অভিভাবকদের মৌখিক নির্দেশ সহজে পালন করতে বা বুঝতে পারে। বুদ্ধিমান বাচ্চাদের মধ্যে প্রবল আবেগপ্রবণতা থাকে। এরা ইতিবাচক ও নেতিবাচক ধারণা অনুভব করতে পারে ও এদের একটি কমপ্লেক্স ও ম্যাচিওর চিন্তাভাবনা থাকবে। এমন বাচ্চাদের উৎসাহিত করা উচিত, বোঝান যে তাদের চিন্তাভাবনা সাধারণের থেকে আলাদা। তবে সে যে দারুণ একটা কিছু এই ধারণা ছোটবেলা থেকেই তার মাথায় ঢুকিয়ে না দেওয়াই ভালো।

2. সতর্কতা ও সার্বিক বিকাশ: নবহাজাতক শিশুর অধিকাংশ সময় তার আশপাশের লোকেদের দেখতে দেখতে কেটে যায়। তবে জিনিয়াস সন্তানরা অভিভাবকদের সঙ্গে আই কনট্যাক্ট করে, মাথা এদিক ওদিক ঘোরায়, শব্দ করে শীঘ্র প্রতিক্রিয়া জানায়। একে অ্যাডভান্স স্তরের পারসেপশান হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। পরিবেশে যে কোনও পরিবর্তন হলেই তারা সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। এটি উচ্চস্তরের পারসেপশানের সংকেত। অন্যান্য শিশুদের থেকে কিছুটা এগিয়ে থাকে জিনিয়াস বাচ্চারা। অন্য সমবয়সি বাচ্চাদের তুলনায় নিজের সার্বিক বিকাশের স্তরটি আগে পেরিয়ে যায় এই বাচ্চারা। সময়ের আগে বসতে, হাঁটতে, বলতে, ধরতে বা কিছু তুলতে শিখে গেলে বুঝতে হবে যে অন্যান্যদের তুলনায় আপনার সন্তান এগিয়ে রয়েছে।

3. একা থাকতে ভালোবাসা ও জেদ- খেলনার সঙ্গে খেলা, রঙ করা, পাজল সল্ভ করতে ভালোবাসলে, নিজের চেয়ে বয়সে বড় বাচ্চাদের সঙ্গে থাকতে চাইলে সেই শিশুও প্রতিভাবান। আশপাশের চরম বুদ্ধিমত্তা ও আবেগ অর্জন করতে চায় বলে তারা একা একা এই সমস্ত কিছুই করে যায়। এই শিশুদের বন্ধু সংখ্যা কম। কোনও সমস্যা ছাড়াই নিজের মনোরঞ্জন করতে পারলে এটি তাদের জিনিয়াস প্রবৃত্তিরই লক্ষণ।বাচ্চারা জেদ করলে সাধারণত তাদের বকাবকি করা হলেও মনে রাখবেন জেদি বাচ্চাদের ডিটারমিনেশান খুব বেশি। তারা যা চায় তা অর্জন করেই থাকে। আবার নিজের কোনও কথায় সকলের সহমত আদায় করে নেওয়াও বুদ্ধিমান বাচ্চার লক্ষণ।

4. ফোকাস- একজন প্রতিভাশালী বাচ্চা ৬ মাসের হওয়ার আগে দীর্ঘ সময়ের জন্য এক জায়গায় চুপ করে বসে মনোনিবেশ করতে পারে। এই বাচ্চারা ১০-১১ মাসেই বিভিন্ন আকার ও রঙ পরস্পরের সঙ্গে ম্যাচ করতে পারে। সমস্যার সমাধান করাও এদের চরিত্রের একটা ধরণ। প্রতিভাবান বাচ্চারা সহজে হার মানে না। কোনও সমস্যা দেখা দিলে, নিজের চেষ্টাতেই তার সমাধান খুঁজে বের করে। বুদ্ধি খাটিয়ে দূরে রাখা জিনিসও নিয়ে নিতে পারে এরা। লক্ষ্য লাভের সমস্ত চেষ্টা করে থাকে এই বাচ্চারা।

5. বিভিন্ন ভাষা শোনা ও স্মৃতিশক্তি; দম্পতিদের যদি বিভিন্ন ভাষার জ্ঞান থাকে, তা হলে সন্তানের সঙ্গে নানান ভাষায় কথা বলুন। একাধিক ভাষার জ্ঞান রয়েছে এমন মা-বাবার সন্তান আইকিউ টেস্টে ভালো ফলাফল লাভ করে। ভালো স্মৃতিশক্তিও বাচ্চাদের প্রতিভার অন্যতম লক্ষণ। এটিও তাদের বুদ্ধিমত্তার মাপকাঠি। আপনার সন্তান কোনও কিছু দেখলে যদি তা দীর্ঘদিন পরও মনে রাখে, তা হলে বুঝতে হবে যে তারা জিনিয়াস।

6. কল্পনাপ্রবণতা ও পড়াশোনায় ঝোঁক- আপনার সন্তান নিজে থেকেই নানা কাহিনি গড়তে পারে? কোনও কাল্পনিক বন্ধুর সঙ্গে খেলাধুলো করে? বয়সের তুলনায় কঠিন কোনও পরিস্থিতি তৈরি করে? এমন কিছু হলে ভাববেন না যে সে মিথ্যে কথা বানিয়ে বলছে। বরং বুঝতে হবে যে আপনার সন্তান কল্পনাপ্রবণ। কল্পনাপ্রবণতা থাকা বাচ্চার মানসিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। পড়াশোনায় আপনার সন্তানের কতটা ঝোঁক রয়েছে, তাও বাচ্চার জিনিয়াস হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে। সাধারণত দেখা গিয়েছে যে প্রতিভাবান বাচ্চারা স্কুলের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে থাকে। সমীক্ষা অনুযায়ী ঠিকমতো স্কুলিং শুরু হওয়ার আগে বাচ্চাদের সঙ্গে খেলাচ্ছলে বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা বললে তারা ভালো প্রদর্শন করে থাকে।

About Susmita Roy

Check Also

আধার কার্ডে মোবাইল নম্বর আপডেট করার সহজ পদ্ধতি

আধার কার্ডে মোবাইল নম্বর আপডেট করার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন

আধার কার্ড ভারতে একটি অপরিহার্য নথি যা অনেক সরকারী এবং অন্যান্য বিভিন্ন কাজের জন্য প্রয়োজনীয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *