ওষুধ ছাড়াই কমবে ফ্যাটি লিভার!
Image: google

ওষুধ ছাড়াই কমবে ফ্যাটি লিভার!

ফ্যাটি লিভার এক গুরুতর অসুখ। এই অসুখ নানা সমস্যা তৈরি করে দেয়। তবে মুশকিল হল, এই রোগ নিয়ে মানুষের তেমন সচেতনতা নেই। তাই এই অসুখটি অনেকটাই অন্তরালে থেকে যায়। আর যখন এই রোগ সামনে আসে, ততদিনে অনেকটাই এগিয়ে যায়

অসুখ। আসলে আমাদের লিভার শরীরের নানা জরুরি কাজ করে। এক্ষেত্রে বাইল তৈরি করা হল লিভারের অন্যতম কাজ। বাইল তৈরির মাধ্যমে লিভার খাদ্য হজমে সাহায্য করে। এছাড়া শরীরের নানা বিপাকীয় কাজ করে লিভার। তাই প্রতিটি মানুষকে নিজের লিভার নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। লিভারে কিন্তু কিছুটা ফ্য়াট থাকে। এই ফ্যাটের পরিমাণ বেড়ে গেলেই মূল সমস্যা দেখা দেয়। এই প্রসঙ্গে কলকাতার

ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: রুদ্রজিৎ পাল বলেন, ফ্যাটের পরিমাণ বাড়তে থাকলে লিভারে প্রদাহ হয়। তখন লিভার সিরোসিস হতে পারে। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে লিভার ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। তাই সতর্ক হতে হবে। এই রোগের দুটি কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে এর ক্ষেত্রে লিভারে ফ্যাট জমার নেপথ্যে থাকে না মদ্যপান। অপরদিকে এর ক্ষেত্রে মদ্যপানের কারণে

সমস্যা হয়। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই বিষয়গুলি নিয়ে ভাবতে হবে। এক্ষেত্রে লিভারে ফ্যাট জমলে শুধু ওষুধে কাজ হয় না। এই অবস্থায় কয়েকটি নিয়ম মানলে কমে লিভার ডিজিজের আশঙ্কা। আসুন জেনে নেওয়া যাক-

​১. ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ- ডা: পাল জানালেন, বেশিরভাগ সময়ই দেখা যে ডায়াবিটিস রোগীদের লিভারে ফ্যাট রয়েছে। এটা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। এবারে দেখা গিয়েছে যে সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে কিন্তু ফ্যাটি লিভার কমে না। তাই ডায়াবিটিস রোগীরা প্রথমে নিজের সুগার নিয়ন্ত্রণ করুন। তবেই ভালো থাকতে পারবেন। অন্যথায় সমস্যা আরও কয়েকগুণ বাড়তে পারে। তাই সতর্ক থাকা খুবই জরুরি। ​
২. ওজন কমান- ওজন বেশি থাকার অর্থ হল শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ রয়েছে বেশি। বিশেষত, পেটে ভুঁড়ি থাকলে কিন্তু বেশি সতর্ক

হয়ে যেতে হবে। কারণ বুঝতে পেটের উপরের পাশাপাশি এক্ষেত্রে পেটের অন্দরেও জমেছে ফ্যাট। আর এই ফ্যাট জমে বিভিন্ন অঙ্গের উপর। এই তালিকা থেকে বাদ যায় না লিভারও। তাই লিভার থেকে ফ্যাট কমাতে চাইলে ওজন কমাতে হবে।

​৩. ঘি, মাখন, ভাজা নয়- ডা: পালের কথায়, আমাদের স্যাচুরেটেড ফ্যাট যেমন ঘি, মাখন থেকে দূরে থাকতে হবে। এছাড়া ট্রান্স ফ্যাটও খাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে ট্রান্স ফ্যাটের মধ্যে রয়েছে বাইরের বিভিন্ন ভাজা খাবার। যেমন আপনার চিপস, তেলে ভাজা ইত্যাদি। তাই এই খাবার থেকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। তবেই ভালো থাকা সম্ভব হবে।
​৪. মদ্যপান নয়- ডা: পালের কথায়, অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের কারণ হল মদ্যপান। তাই মদ্যপান থেকে প্রতিটি

মানুষকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে নিয়মিত মদ্যপান করলে এই প্রবণতা আরও বাড়ে। তাই অবশ্যই মদ্যপানের মতো সমস্যা থেকে প্রতিটি মানুষের দূরে যাওয়া উচিত বলেই জানালেন তিনি।
​৫. ব্যায়াম করুন- ব্যায়ামের কোনও বিকল্প এক্ষেত্রে নেই। এই অবস্থায় ব্যায়াম করা যে কোনও মানুষের ক্ষেত্রেই জরুরি। এবার ফ্যাটি

লিভারের মতো রোগ থাকলে তো সেই কাজটা আরও বেশি প্রয়োজন হয়ে যায়। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই দিনে ৪৫ মিনিট ঘাম ঘরিয়ে ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম করলে গোটা শরীরের ফ্যাট ঝরবে। ফলে লিভার থেকেও ফ্যাট কমবে। তাই চিন্তার কোনও কারণ নেই। এছাড়া প্রয়োজনে ওষুধ খেতে হতে পারে বলে জানালেন ডা: পাল।

Check Also

তরুণদের মাঝে হৃদরোগ বাড়ছে যে কারণে

তরুণদের মাঝে হৃদরোগ বাড়ছে যে কারণে

তরুণদের মধ্যে বেড়ে চলেছে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *