পুরুষদের মধ্যে হওয়া অন্যতম প্রধান ক্যানসার হল প্রস্টেট ক্যানসার। গবেষণা অনুসারে, ফুসফুস ক্যান্সারের পরেই পুরুষরা সবচেয়ে বেশি যে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়, তা হল প্রস্টেট ক্যান্সার। প্রাথমিক স্তরে এই ক্যান্সার ধরা পড়লে ভয় থাকে না। তবে অনেক ক্ষেত্রেই প্রাথমিক পর্যায়ে
ক্যান্সারের লক্ষণগুলি চিনতে পারা যায় না। যখন সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে, তখন রোগীকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক, প্রস্টেট ক্যান্সার কী এবং এর উপসর্গ সম্পর্কে –
প্রস্টেট ক্যান্সার কী?
পুরুষদের প্রস্টেট গ্রন্থির ক্যান্সারকেই প্রস্টেট ক্যান্সার বলে। প্রস্টেট একটি ছোটো আখরোটের আকারের গ্রন্থি। মুত্রথলির নীচ থেকে যেখানে মুত্রনালী বের হয়েছে সেটির পাশে এই গ্রন্থিটি বিদ্যমান। এটি সেমিনাল তরল উত্পন্ন করে। এর মধ্য দিয়েই মূত্র এবং বীর্য প্রবাহিত হয়। এই
গ্রন্থির মূল কাজ হচ্ছে বীর্যের জন্য কিছুটা তরল পদার্থ তৈরি করা। চিকিত্সকদের মতে, পুরুষদের বয়স ৫০ পেরোলেই এই অসুখের আশঙ্কা বাড়ে। এই রোগে বড় হয়ে যেতে পারে মূত্রস্থলীর প্রস্টেট গ্রন্থির আয়তনও।
প্রস্টেটে ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ-
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রস্টেটে ক্যান্সার সময়মতো চিহ্নিত করা গেলে বাঁচানো যায় রোগীর প্রাণ। তাই এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি সম্পর্কে সতর্ক থাকা আবশ্যিক। ১) রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব করার প্রবণতা ২) প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা ৩) প্রস্রাব পেলে ঠিক ভাবে মূত্রত্যাগ করতে
না পারা ৪) মূত্রত্যাগের সময়ে ব্যথা বা জ্বালা হওয়া ৫) মূত্রের সঙ্গে রক্তপাত হলে বা মূত্রের রং লাল, গোলাপী কিংবা গাঢ় বাদামি হলে অবিলম্বে চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। ৬) বিশেষজ্ঞদের মতে, পিঠের নীচের দিক, মেরুদণ্ড, কোমর, নিতম্ব, কুচকি ও থাইয়ের
ব্যথা প্রস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। ৭) প্রস্রাব করার সময় চাপ দেওয়া বা দীর্ঘ সময় ধরে মূত্রত্যাগ করা ৮) মূত্রত্যাগের গতি কমে যাওয়া তবে প্রস্রাবের সমস্ত লক্ষণ মানেই প্রস্টেট ক্যান্সার নয়। কিছু সমস্যা মূত্রনালীর সংক্রমণের কারণেও হতে পারে।
রোগ নির্ণয়-
প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন টেস্ট করে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। সাধারণত রক্তে ‘পিএসএ’-র মাত্রা ১ থেকে ৪-এর মধ্যেই থাকে। তবে কারও কারও রক্তে ‘পিএসএ’-র মাত্রা ৪-এর বেশি হওয়া মানেই যে অসুখ বাসা বেঁধেছে এমনটা ধরে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। বরং নিশ্চিত
হতে ডিজিটাল রেক্টাল টেস্ট করাতে হয়। এই টেস্টে প্রস্টেটে কোনও রকম স্ফীতি লক্ষ্য করা যায়, তা হলে বায়োপসি করানো জরুরি। তবেই প্রস্টেট ক্যান্সারের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ডিসক্লেইমার: প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেজ্ঞের পরামর্শ নিন।