রক্তের চর্বি দূর করতে যে ১০টি পরামর্শ মেনে চলবেন
Image: google

রক্তের চর্বি দূর করতে যে ১০টি পরামর্শ মেনে চলবেন

র’ক্তে চর্বি বেশি থাকলে ধমনির গায়ে চর্বি জমা হতে থাকে। এর ফলে ধমনি সরু হতে থাকে এবং র’ক্তের সঞ্চালন সীমিত হতে থাকে। কখনো কখনো র’ক্ত সঞ্চালন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই বন্ধ হওয়া যদি হার্টের করোনারি ধমনিতে হয় তখন দেখা দেয় হার্ট অ্যাটাক। এর ফলে

বিভিন্ন জটিলতাসহ তাত্ক্ষণিক মৃ’ত্যুও হতে পারে। আর যদি মস্তিষ্কের মধ্যে এই ঘটনা হয় তবে সেটা হয় স্ট্রোক। সচেতনতা, জীবন যাপন পদ্ধতির স্বাস্থ্যসম্মত পরিবর্তন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবনই এই ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকার মূল উপায়।

চলুন জেনে নিই র’ক্তের চর্বি দূর করতে চিকিৎসকরা যে ১০টি উপদেশ দিয়ে থাকেন।

১. ক্ষতিকর অভ্যাসগুলো চিহ্নিতকরণ- প্রথমে নিজের জীবন যাপনে সহজ কিছু স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনা। ধীরে ধীরে পরিবারের সবার জন্যই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি করার চেষ্টা করা। ধূমপান র’ক্তে চর্বি ও তত্সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি বহুলাংশে বৃদ্ধি করে।
২. খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন- প্রতিদিন ২০০-৩০০ মি. গ্রাম কোলেস্টেরল শরীরের জন্য যথেষ্ট। তাই এর চেয়ে বেশি কোলেস্টেরল আছে—এ ধরনের খাবার কম খাওয়া। নিয়ন্ত্রিত সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়াম করার পরেও যাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না থাকে; তাদেরকে ওষুধ খেতে হবে। ওষুধ খেতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে।

৩. কিছু খাবার পরিহার -পরিহার করতে পারেন বা কম খেতে পারেন ডিমের কুসুম, গরু বা খাসির মাংস, কলিজা, মগজ, পূর্ণ ননিযুক্ত দুধ ও দুধজাত খাবার (মাখন, মার্জারিন, পনির, মেয়োনিজ ইত্যাদি) কোমল পানীয়, ফাস্ট ফুড।
৪. নতুন খাদ্য তালিকা – খাদ্য তালিকায় বেছে নিন মাছ, মুরগি (চামড়া ছাড়া), ননিহীন দুধ, জলপাই তেল বা অলিভ অয়েল, লাল চাল, লাল আটা ইত্যাদি। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন অন্তত তৈলাক্ত মাছ খান। এতে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা র’ক্তে ক্ষতিকর ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে।

৫. প্রাধান্য দিন কিছু খাবার – সবুজ পাতা ও ডাঁটাসুদ্ধ সবজি, যেমন বিভিন্ন ধরনের শাক এবং খোসাসহ ফলমূলে (যেমন: পেয়ারা, আপেল) রয়েছে অন্ত্রের চর্বি শোষণ কমানোর উপাদান। প্রতিদিন এ ধরনের খাবার আপনার র’ক্তে এলডিএলের মাত্রা ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে বলে গবেষণায় তথ্য মিলেছে।
৬. তেল চর্বি বাদ – চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিন। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় যে চর্বি সলিড বা কঠিন অবস্থায় থাকে, যেমন: গরু-খাসির মাংসের সঙ্গে লেগে থাকা চর্বি, ঘি, মাখন, ডালডা, মার্জারিন, ক্রিম ইত্যাদি খারাপ চর্বি। খাবার রান্নায় তেল কম ব্যবহার করুন। বারবার একই তেলে ভাজাভুজি করা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। অতি তাপমাত্রায় এই তেল পরিবর্তিত হয়ে ক্ষতিকর ট্রান্সফ্যাটে পরিণত হয়। তাই অনেক ফাস্ট ফুড, বেকারির খাবারও ক্ষতিকর।

৭. কমিয়ে দিন শর্করা – তেল-চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া কমালেই হবে না। আমিষ বা প্রোটিন, শর্করা ও চর্বি—সব উপাদানই শেষ পর্যন্ত রূপান্তরিত হয়ে শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হতে পারে। তাই মোট ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমাতে হবে, বিশেষ করে অতিরিক্ত শর্করা বা চিনি।
৮. শারীরিক পরিশ্রম জরুরি – শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। এ জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন নিয়মিত ৩০-৪০ মিনিট শরীর চর্চা করুন বা জোরে হাঁটুন। যাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি রয়েছে; তারা দিনে ৩০ মিনিট হাঁটলে স্ট্রোক রোগের ঝুঁকি অর্ধেক কমে আসে।

৯. ওটমিল বা ভুট্টার তৈরি খাবার খান সকালের নাশতায় ভুট্টা বা যবের তৈরি ওটমিল বা কর্নফ্লেক্স হতে পারে একটি আদর্শ খাবার। এতে করে দিনের শুরুতেই ১ থেকে ২ গ্রাম আঁশ খাওয়া হয়ে যাবে, যা অন্ত্রে কোলেস্টেরল শোষণে বাধা দেবে।
১০. বাদাম খান – প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম আপনার র’ক্তে ক্ষতিকর চর্বি বা কম ঘনত্বের লিপিডের (এলডিএল) মাত্রা ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। এ ছাড়া বাদাম খেলে পাবেন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা শক্তি জোগাবে সারা দিন।

Check Also

তরুণদের মাঝে হৃদরোগ বাড়ছে যে কারণে

তরুণদের মাঝে হৃদরোগ বাড়ছে যে কারণে

তরুণদের মধ্যে বেড়ে চলেছে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *